আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবদ্দশায় অনেক গরীব ছিলেন, বেশিরভাগ সময় অনাহারে কাটাতেন, পেটে ক্ষুধা নিয়ে হাদীস মুখস্থ করতেন। এই তথ্যগুলো আমরা সবাই জানি।
কিন্তু, আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু শেষ জীবনে কোটিপতি হন, এই তথ্যটি আমরা কয়জন জানি?
উমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফতকালে আবু হুরাইরাকে বাহরাইনের গভর্নর হিশেবে নিয়োগ করা হয়। গভর্নর থাকাবস্থায় তিনি সেখানে ব্যবসা করেন, তাঁর জমিতে ফসল ফলে, তাঁর আস্তাবলের ঘোড়ার বাচ্চা হয়। সেগুলো বিক্রি করে তিনি মদীনায় ফিরেন।
তাঁর কাছে তখন ১০,০০০ দিরহাম। তখনকার সময়ের দশ হাজার দিরহাম আমাদের সময়ে (PPM অনুযায়ী) প্রায় দেড় কোটি টাকা!
যে সাহাবী কিছুদিন আগে নিঃস্ব ছিলেন, হঠাৎ করে তিনি কোটিপতি হয়ে যান। তাঁর কাছে এতো টাকা দেখে খলিফা অবাক হন। এমনকি তিনি 'সন্দেহ' করেন আবু হুরাইরা এতো টাকা কোথায় পেলেন।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু খলিফার কাছে জবাবদিহি করেন। তারপরও উমর সন্তুষ্ট হলেন না। তিনি বাহরাইনে কয়েক সদস্যের তদন্ত কমিটি পাঠালেন। তদন্ত কমিটি এসে রিপোর্ট দিলো, আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু সত্য বলছেন। তিনি ব্যবসা ও ফসল ফলনের মাধ্যমে এতো টাকা উপার্জন করেন। [আল্লামা ইবনে কাসির, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া: ৮/২২২-২২৩]
বেশিরভাগ সাহাবীদের অর্থনৈতিক জীবন সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই স্পষ ধারণা নেই। কেউ কেউ মনে করেন, সাহাবীরা বুঝি গরীব ছিলেন। হ্যাঁ, সাহাবীরা একটা সময় পর্যন্ত গরীব ছিলেন ঠিকই, কিন্তু পরবর্তীতে তাঁদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়। বিশেষ করে রোম ও পারস্য সাম্রাজ্য বিজয়ের পর। তখন অনেক সাহাবী কোটিপতি হন। তবে, বেশিরভাগই টাকা সঞ্চয় করেননি, তারা দান করে যান। কেউ কেউ এক বসায় কোটি কোটি টাকাও পর্যন্ত দান করেন।
0 মন্তব্যসমূহ